মধু খাওয়ার গুনাগুন ও - মধু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানুন

 মধু মধু আমরা অনেকেই চিনে থাকি। মধু আমরা অনেকেই অনেক ভাবে খেয়ে থাকি। মধু অনেক সমস্যার সমাধানের ওষুধ। মধু প্রাকৃতিক ভাবে পাওয়া এক ধরনের উপকারী খাদ্য এতে রয়েছে নানা ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং রোগ নিরাময়ের সক্ষমতা।


প্রাচীনকাল থেকে মধু আমাদের রোগ নিরাময় খাদ্য। এটি খেলে অনেক সমস্যা সমাধান হয়ে যায় আমরা বিভিন্ন অসুখের জন্য এটি খেয়ে থাকি। আজকে আমরা আর্টিকেল থেকে জানব মধু খাওয়ার আর কি কি গুনাগুন রয়েছে তা অজানা তথ্যগুলো জানবো এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানবো। চলুন দেরি না করে মধুর গুনাগুন ও নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিই।

পোস্ট সূচিপত্রঃ মধু খাওয়ার গুনাগুন ও - মধু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানুন,

  • মধু কি
  • মধু খাওয়ার নিয়ম
  • মধু খাওয়ার উপকারিতা
  • মধু দিয়ে রূপচর্চা
  •  খাটি মধু চেনার উপায়
  • মধু চা ও দুধ দিয়ে মধু খাওয়ার উপকারিতা

মধু কি

মধু আমরা সকলে দেখেছি বা খেয়েছি। আমরা সবাই জানি মধু মৌমাছি দ্বারা মৌচাক থেকে সংগ্রহ করা হয়। মধু হলো একপ্রকার ঘন ও মিষ্টি তরল পদার্থ। যা মৌমাছি ফুলের নির্যাস থেকে তৈরি করে মৌচাকে সংরক্ষণ করে। এটি উচ্চ ঔষধি গুন সম্পূর্ণ তরল পদার্থ। বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতে চিনির বদলে এটি ব্যবহার করা যায় চিনির চেয়ে এর অনেক সুবিধা রয়েছে। মধুর বৈশিষ্ট্য গন্ধের জন্য তাই অনেকেই চিনি যে মধু বেশি পছন্দ করেন

মধু খাওয়ার নিয়ম

এতক্ষণ আমরা মধু কি তা সম্পর্কে জানলাম এখন আমরা জানবো মধু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানব, সাধারণত মধু খালি পেটে খাওয়া উচিত। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মধু খেতে হবে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক থেকে দুই চামচ শুধু মধু খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করা যেতে পারে। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে দুই থেকে তিন চামচ মধু এক চামচ লেবু একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও রাতে মধু খাওয়ার অভ্যাস করা যেতে পারে। রাতে খাবারের তিন থেকে চার ঘণ্টা পর বা ঘুমানোর আগে হালকা গরম পানির সঙ্গে দুই থেকে তিন চামচ মধু একসঙ্গে লেবু একসঙ্গে মিশে খেতে পারেন। এতেও অনেক উপকার রয়েছে। এছাড়াও শীতে তিন বেলা দুই চা চামচ করে শুধু মধু খেতে পারেন এতে অনেক উপকার আসবে শরীরে।

মধু খাওয়ার উপকারিতা

এতক্ষণ আমরা মধু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানলাম এখন আমরা মধুতে থাকা উপকরণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানব। মধুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল এনজাইম থাকে। এই উপাদানগুলো শরীর বিভিন্ন অসুখ বিসুখ থেকে রক্ষা করে। মধুর উপকারিতার বিকল্প নেই। মধু খাওয়ার উপকারিতা গুলো হলঃ

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মধু খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। একই সঙ্গে ডায়রিয়া দূর করে।

রক্ত শূন্যতা দূর করে। মধু রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে এবং রক্তশূন্যতা দূর করে।

হার্টের রোগ দূর করে। এক চা চামচ মৈরির গুরার সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে হার্টের সমস্যা দূর করে

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর করে। ছড়িয়ে শরীরে থাকা বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু প্রতিরোধ করে।

মধু শরীরের রক্ত পরিষ্কার করে। এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে দুই চা চামচ মধু ও এক চা চামচ লেবুর রস খালি পেটে খেলে শরীরের রক্ত পরিষ্কার করে

হাঁপানি ও শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা দূর করে। প্রতিদিন গোলমরিচের গুড়া এবং এক চা চামচ মধু ও আদা মিশিয়ে খেলে হাঁপানি ও শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা দূর করে।

শরীরের মেদ কমাতে সাহায্য করে। মধুতে চর্বি থাকে না পেট পরিষ্কার হয় যার কারণে দূর হয়।

যৌন দুর্বলতা দূর করে। সকালে ছোলার সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে। নারী ও পুরুষ উভয়ের যৌনা ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

মধু শরীরের শীত তাপ নিয়ন্ত্রণ করে। শরীর উষ্ণতা  আনতে সাহায্য করে মধু। শীতকালে সকালে রাতে মধু খেলে শরীরে উষ্ণতা আসে এবং শরীরে ঠান্ডা কমে যায়।

আমাদের প্রতিনিয়ত নিয়ম করে খাওয়া উচিত এটি অনেক উপকারী অনেক অসুখের নিরাময় পাওয়া যায়।

মধু দিয়ে রূপচর্চা

বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের মধু, নানা কাজে করা হচ্ছে খাদ্যদ্রব্য থেকে প্রসাধনী রূপচর্চা করা হচ্ছে এই মধু দিয়ে ।এছাড়াও চিকিৎসা শাস্ত্রে মধু ব্যবহৃত হচ্ছে। মধুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যান্টিসেপটিক ব্যাকটেরিয়ারোধি উপাদান যা শরীরে ব্রণ দূর করে। ব্যবহার করলে ত্বকে অস্বস্তিকর জ্বালা ভাব দূর করে। ত্বকে মধু ব্যবহার করলে মুখ মসৃণ ও সুন্দর করে মুখের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। এছাড়াও গরম দুধের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়।

 খাটি মধু চেনার উপায়

এতক্ষণ আমরা মধু মধু খাওয়ার নিয়ম মধুর উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম এখন আমরা জানবো খাঁটি মধু কিভাবে পাওয়া যায় কোথা থেকে পাওয়া যায় এবং চেনার উপায় চলুন। তাহলে আমরা দেরি না করে খাঁটি মধু চেনার উপায় সম্পর্কে জেনে নিই,

বাজারে নানা ধরনের মধু কিনতে পাওয়া যায়। এছাড়াও পথে ঘাটে রাস্তায় ফেরি করে অনেকেই মধু বিক্রি করে। এই ভেজালের যুগে কিভাবে জানবো এই মধুগুলা খাঁটি কিনা

খাঁটি মধু ফ্রিজে না রাখলেও স্বাভাবিক স্থানের জমাট বাধবেনা। আগের মতই ঘন ও তরল থাকবে। তাহলে বুঝে নিব এটি খাঁটি মধু। আর ফ্রিজে রাখার পর জমাট বাদে বা দানা দানা দেখা যায় । বা মধুর উপরে সাদা সাদা স্তর পড়ে তাহলে বুঝে নিতে হবে এই মধু খাটি না।

কাঁচা ও খাঁটি মধুতে বুদবুদ আকারে দেখা দিবে সাদা ফেনার মত। এটি খাঁটি মধু চেনার চিহ্ন এক থেকে বোঝা যায় এই মধুর মধ্যে রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো নাই।

 খাটি মধুতে ম্যাচের কাটিং ডুবিয়ে আগুন ধরালে এর সঙ্গে সঙ্গে জলে উঠবে। আর যদি জ্বলে না ওঠে তাহলে বুঝে নিতে হবে মধু খাটি না মধু তে ভেজাল রয়েছে।

এছাড়াও ভিনেগার দ্বারা মধুর মান পরিমাপ করা যায়। ভিনেগার গোলানো পানিতে এক থেকে দুই ফোঁটা মধু রস মিশাতে হবে। মেশানোর পর যদি ফেনা দেখা দেয় তাহলে বুঝে নিতে হবে মধুতে ভেজাল রয়েছে

মধু চা ও দুধ দিয়ে মধু খাওয়ার উপকারিতা

আমরা এখন জানবো দুধ দিয়ে মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। গরম দুধ ও মধু একসঙ্গে খেলে স্নায়ুতন্ত্রের প্রভাব ফেলে মানসিক চাপ দূর করে। ক্লান্তি দূর করে ও হজম শক্তি বাড়ায়। এছাড়াও রাতে ঘুম ভালো হয়।রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও যারা গ্যাসের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য এটা অনেক উপকারী।


 শক্তি বাড়িয়ে তোলে প্রতিদিন সকালে নাস্তা খাওয়ার পরে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে মধুর মিশিয়ে খেলে শরীরের সারা দিনের শক্তি পাওয়া যায়। পেটের সমস্যা দূর করে নানান ধরনের হজমের সমস্যা দূর করে। এছাড়াও এক গ্লাস দুধের সঙ্গে দুই চা চামচ মধু খেলে মনোযোগ বাড়ায়। শরীর সুস্থ রাখে এবং বিভিন্ন ধরনের চিন্তা দূর করে। শরীর সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখে। মস্তিষ্ক ঠিক আছে এবং যেকোনো কাজে মনোযোগ বাড়িয়ে দেয়।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url