চুলের সমস্যায় বাড়িতে তৈরি করুন আয়ুর্বেদিক তেল
তেলে ভেষজ উৎপাদন মিশিয়ে তৈরি করতে পারেন আয়ুর্বেদিক তেল। এই ভেষজ উৎপাদ চুলকে সুস্থ রাখতে পাশাপাশি চুলকে দ্রুত বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। অনেকেই চুল নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। তাছাড়াও শীতকালএ চুলে একটু বেশি সমস্যা দেখা দেয়।
ভলিউম হ্রাস পাওয়া, চুল ঝরে পড়া খুশকি হওয়া বৃদ্ধি পায়।এ ছারাও চুল ঝরে পড়ে। তাই এই চুলের সমস্যা দূর করার জন্য ঘরোয়া পদ্ধতিতে তেল বানিয়ে ব্যবহার করা প্রয়োজন। চলুন তাহলে আমরা এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিব ঘরোয়া পদ্ধতিতে তেল তৈরি সম্পর্কে।
পোষ্ট সূচিপত্রঃচুলের সমস্যায় বাড়িতে তৈরি করুন অর্গানিক ও আয়ুর্বেদিক তেল
- কারি পাতা দিয়ে তৈরি তেল
- এলোভেরা তেল
- আমলকির তেল
- পেঁয়াজের তেল
- জবা পাতা ও ফুলের তেল
- আয়ুর্বেদিক তেল এর সুবিধা
কারি পাতা দিয়ে তৈরি তেল
কারি পাতা যা আমরা অনেকেই চিনে থাকি। আমরা এটি অনেকেই অনেকভাবে ব্যবহার করি তবে এই কারি পাতা চুলের সমস্যার সমাধান এর উপকরণ। চলুন তাহলে আমরা আজকে কারি পাতার আয়ুর্বেদিক তেল বানানোর সম্পর্কে জানব, কারি পাতার তেল বানানোর উপকরণগুলো হলোঃ
- নারিকেল তেল লাগবে ৩ টেবিল চামচ
- আর টাটকা তাজা কারি পাতা লাগবে ১ গোছা
এখন আমরা জানবো বানানোর পদ্ধতিঃ
- প্রথমে ভালো শুকনো কড়াই দিতে হবে
- এরপর করে প্রথমে নারিকেল তেল দিতে হবে
- এরপর হালকা গরম হয়ে আসলে তাতে কারি পাতা দিতে হবে
- কারি পাতা কালচে কালার হয়ে আসলে নামিয়ে নিতে হবে
- তারপর ভালোভাবে ঠান্ডা ও অন্ধকার জায়গায় রাখুন বোতল ভর্তি করে
- এরপর ব্যবহারের আগে অবশ্যই আচ দিতে হবে
এলোভেরা তেল
এতক্ষণ আমরা কারি পাতার তেল সম্পর্কে জানলাম এখন আমরা এলোভেরা জেল সম্পর্কে জানব চলন্ত আমরা জেনে নিই, । অ্যালোভেরা তেল তৈরির উপকরণ গুলোঃ
- অ্যালোভেরা জেল ১ টা পাতার
- রোজমেরি এসেনশিয়াল তেল, বা যে কোন এসেনসিয়াল তেল দুই চামচ
- খাঁটি নারিকেল তেল এক কাপ
এখন আমরা জানবো বানানোর পদ্ধতি সম্পর্কেঃ
- প্রথমে এলোভেরা জেল ও নারিকেল তেল নিতে হবে
- হালকা আচে নারিকেল তেল ও অ্যালোভেরা নাড়তে হবে পাঁচ থেকে সাত মিনিট
- এরপর পাঁচ থেকে সাত মিনিট হালকা আচে মিশিয়ে নিয়ে নামিয়ে নিতে হবে
- এরপর একটু ঠান্ডা হয়ে আসলে তাতে রোজমেরি আসেনিয়াল তেল মিশিয়ে দিতে হবে
- কিছুক্ষণ নাড়িয়ে তৈরি হয়ে যাবে এলোভেরা তেল।
এলোভেরা তেল চুলের জন্য অনেক উপকারী। এটি সাধারণত বাজারেও কিনতে পাওয়া যায় তবে বাড়িতে বানানো টা প্রাকৃতিকভাবে হয়ে থাকে। কোন প্রকার ভেজাল ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকেনা। তাই এটি বাড়িতে তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন। এলোভেরা জেল চুলের পুষ্টি নেবে দেয়। এবং চুলকে দ্রুত বৃদ্ধি করে তোলে। অনেকেই চুল বৃদ্ধি সমস্যা নিয়ে ভুগছেন চুলের আগার নষ্ট এসব সমস্যা নিয়ে ভুগছেন তাদের জন্য এই তেলটি অনেক উপকারী।
আমলকির তেল
এতক্ষণ আমরা অ্যালোভেরাতের পরকে সালাম এখন আমরা আমলকির তেল সম্পর্কে জানব। আমলকি চুলের জন্য অনেক উপকারী। এটি চুলকে ঘন করতে সাহায্য করে এবং চুল উঠা বন্ধ করে। এটি খুব দ্রুত চুলকে দ্বিগুণ ঘন করতে সাহায্য করে। চলুন এই তেলটি কিভাবে তৈরি করতে হয় জেনে নিই। তেল তৈরির উপকরণ গুলো হলঃ
- চার টেবিল চামচ এক্সট্রা ভার্জিন তেল
- নারিকেল তেল দুই চামচ
- দুই চামচ তিলের তেল
- দুই থেকে তিনটা শুকনো আমলকি
চলুন এখন আমরা বানানোর পদ্ধতি সম্পর্কে জানবঃ
- শুকনো কড়াই য়ে নারিকেল তেল দুই চামচ, তিলের তেল দুই চামচ , চার টেবিল চামচ এক্সট্রা তেল যেকোনো , এবং দুই থেকে তিনটা শুকনা আমরা কি ভেঙ্গে দিতে হবে।
- একসঙ্গে সবগুলো গরম আচে ৮ থেকে ১০ মিনিট নাড়তে হবে এমন ফুটিয়ে নিতে হবে।
- সবগুলো একসঙ্গে ফুটানো হয়ে গেলে ঠান্ডা করে বোতল ভর্তি করতে হবে
- ঠান্ডার স্থানে রাখতে হবে।
এই তেলটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন। অনেক উপকার পাবেন। চুলকে দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে ঘন করে তুলবে। চুলে আমলকি গুনাগুন অনেক বেশি।
আরো পড়ুনঃ আমলকি খাওয়ার উপকারিতা জানলে অবাক হয়ে যাবেন
পেঁয়াজের তেল
পেঁয়াজের তেল শীতে ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। শীতে চুলে অনেক খুশকি জমে। অনেকে এটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন তবে পেঁয়াজের তেল খুশকি দূর করতে পারে, তাহলে আমরা এখন পিয়াজি তেল বানানোর পদ্ধতি জেনে নেই , উপকরণগুলো জেনে নিই ,
- চার টেবিল চামচ খাঁটি নারিকেল তেল
- রসুনের কোয়া দুইটা
- পেঁয়াজ একটা ছোট কুচোন
- রোজমেরি ওয়েল ১ চামচ
বানানোর পদ্ধতি জেনে নিইঃ
- কড়াই এ নারিকেল তেল দিয়ে, তাতে রসুনের কোয়া কুচোন ও পিয়াজগুলো দিতে হবে।
- বাবল ওটা পর্যন্ত হালকা আচে যে নাড়তে হবে
- বাবল উঠলে নামিয়ে নিতে হয় নেওয়ার পর হালকা ঠান্ডা করে তাতে রোজমেরি তেল মিশিয়ে দিতে হবে।
- বানানো হয়ে গেলে পরিষ্কার বোতলে ভরে ঠান্ডার স্থানে রাখতে হয় । এবং এটি এক সপ্তাহ পর ব্যবহার করতে হবে।
জবা পাতা ও ফুলের তেল
এখন আমরা জবা পাতা ও ফুলের তেল সম্পর্কে জানব, জবা পাতা ও ফুল চুলের জন্য অনেক উপকারী। চুলকে ঘন ও স্বাস্থ্য উজ্জ্বল করার জন্য এই তেল ব্যবহার করা উচিত, চলুন তাহলে আমরা এই তেল বানানোর পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিই, তেল তৈরির উপকরণগুলোঃ
- আধা কাপ জবা পাতা
- জবা ফুল দুইটা
- ১ থেকে ৪ কাপ নারিকেল তেল
- এক থেকে চার কাপ আমন্ড তেল
চলুন এখন আমরা বানানোর পদ্ধতি জানবঃ
- প্রথমে কড়াইয়ে নারিকেল তেল ও আমন্ড তেল দিয়ে হালকা আচে জাল দিব
- জবা ফুল ও পাতার ধুয়ে হালকা শুকিয়ে দিতে হবে
- পাঁচ মিনিট হালকা আচে রেখে নামিয়ে নিতে হবে
- এরপর ঠান্ডা হলে বোতলে ভরে শুষ্ক স্থানে রাখতে হবে
- তেলটি এক সপ্তাহ পর ব্যবহার করতে হবে
আয়ুর্বেদিক তেল এর সুবিধা
আয়ুর্বেদিক তেল এই তেলের সুবিধা রয়েছে। এ তেলগুলো বাজারেও কিনে পাওয়া যায়। তবে এগুলো একটি তেলের দাম অনেক অনেকের কিনে সামর্থ্য ওঠে না। তাই আমরা ঘরে তৈরি করে আয়ুর্বেদিক তেল ব্যবহার করতে পারি। এই তেল গুলো অনেক সমস্যা সমাধান করে চুলের এর। শীতের সময় চুলে অতিরিক্ত সমস্যা হয়ে থাকে। এই সমস্যাগুলো দূর করার জন্য আয়ুর্বেদিক তেল বাড়িতে বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। আয়ুর্বেদিক তেল চুলে অনেক পুষ্টি ও মজবুত করে।
আয়ুর্বেদিক তেল প্রাচীন কাল থেকে অনেকেই ব্যবহার করে আসছেন। এটি নিজ হাতে বাড়িতে তৈরি করে ব্যবহার করলে চুলে বেশি রকম সমস্যা দেখা দেয় না এই তেলকে প্রাকৃতিক তেল বলে। এই তেল গুলো বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। তবে বাজারে থেকে বাড়িতে বানিয়ে চুলের ব্যবহার করলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায় চুলের এর। বাড়িতে বানিয়ে আয়ুর্বেদিক তেল ব্যবহার করলে কোন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url