শীতকালে খেজুর এর রস সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
খেজুরের রস আমরা সকলে খেয়ে থাকি আজকে আমরা সে খেজুরের রস সম্পর্কে জানব। সাধারণত মাটির হাড়িতে খেজুরের সংগ্রহ করা হয়। আজকে আমরা আর্টিকেল থেকে খেজুরের রস সম্পর্কে জানব। আমরা অনেকেই এটি খেয়ে থাকি তবে এর উপকার বা অপকার সম্পর্কে জানা নেই আজকে আমরা তা জেনে নেই।
খেজুরের রস দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য বানানো যায়। গ্রামে অনেকেই আছে খেজুরের রস অনেক পছন্দ করেন। এটি প্রতিবছর শীতকালে খেজুরের গাছ থেকে পাওয়া যায়। এটি খেতে অনেক সুস্বাদু ও মিষ্টি জাতীয়। এটি সাধারণ গ্রাম অঞ্চলে পাওয়া যায় তারপর মাটির হাঁড়িতে করে সংগ্রহ করতে হয়। চলেন আজকে আমার সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি খেজুরের রস সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই
পোস্ট সূচিপত্রঃশীতকালে খেজুর এর রস সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
- খেজুরের রস সংগ্রহ সম্পর্কে জানুন
- খেজুরের রস দিয়ে তৈরি জনপ্রিয় খাদ্য
- খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা
- খেজুরের রস দিয়ে গুড় সম্পর্কে জানুন
- খেজুরের রসের অপকারিতা
- খেজুরের রস খাওয়ার সতর্ক ও পরামর্শ
খেজুরের রস সংগ্রহ সম্পর্কে জানুন
খেজুরের সম্পর্কে আমরা সকলেই পরিচিত। এটি প্রতিবছর শীতকালীন মৌসুমে পাওয়া যায়। তবে এটি প্রাপ্তবয়স্ক খেজুরের গাছ থেকে পাওয়া যায়। এটি নিজের হাতে মাটির হাড়ি বা প্লাস্টিকে পাত্র ব্যবহার করে সংগ্রহ করতে হয় । এটি মিষ্টিও সুস্বাদু। এটিসাধারণত গ্রাম অঞ্চলে পাওয়া যায়। শীতকালে সকল কৃষকেরা খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে এবং বিক্রি করে। এছাড়াও খেজুরের রস থেকে বিভিন্ন ধরনের গুড় তৈরি হয়। এই রস খেতে মিষ্টি বলে সবাই অনেক আগ্রহসহ খেয়ে থাকে। গ্রামের কৃষকরা খেজুরের রস রাতে সংগ্রহ করতে দিয়ে এসে সকালে গাছ থেকে নামিয়ে নেয়। তারপর এটি ছেঁকে খাওয়ার উপযুক্ত করে।
খেজুরের রস দিয়ে তৈরি জনপ্রিয় খাদ্য
খেজুরের রস খেতে সুস্বাদু হলে এটি দিয়ে অনেক জনপ্রিয় শীতকালীন তৈরি পিঠা বানানো যায়। এছাড়াও এর খেজুরের রসের মূল উপকরণ হলোগুড় তৈরি করা। এই খেজুরর রস দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের গুড় সারা দেশে প্রচলিত। খেজুরের রস দিয়ে পুলি পিঠা ভাপা পিঠা বিভিন্ন ধরনের পিঠা খাওয়া যায়। খেজুরের রস দিয়ে পুলি পিঠা, ভাপা পিঠা ,চিতই পিঠা্। পায়েস, খেজুরের গুড় ,নলেন গুড়। নালিগুড়, তৈরি করা যায়। এইজন্য শীতকালে খেজুরের রস অনেক জনপ্রিয়।
খেজুরের রস খাওয়ার উপকারিতা
এতক্ষণ আমরা খেজুরের রস ও জনপ্রিয় খাবার সম্পর্কে জানলাম এখন আমরা খেজুরের রসের উপকারিতা সম্পর্কে জানব। আমরা অনেকেই এটি খেয়ে থাকি তবে এটি শরীরের জন্য কি উপকার এনে তা আমরা জানিনা চলুন অজানা তথ্যগুলো জেনে নেই। এটি তরল পানীয় জাতীয় এটি সুস্বাদু ও মিষ্টি শরীর অনেক সুস্থ ও তরতাজা রাখে। খেজুরের রস খেয়ে এক ধরনের এনার্জি ড্রিংস বলা হয়। শর্করা গ্লুকোজ ওফ্রুক্টোজ কে ২০%।
এই মিশ্রিত শর্করার সাথে খনিজ লবণ ও মিনারেল রয়েছে। এক গ্লাস খেজুরের রস খেলে নিমিষেই শরীরে এলার্জি পাওয়া যায় এই জন্য একেক ধরনের এনার্জি ড্রিংস বলা হয়েছে। রসে থাকা খুব ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ রক্তের সঙ্গে নিমিষেই মিশে গিয়ে শরীরে এনার্জি দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেই। খেজুরের রস রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। অনেকেই বিভিন্ন ধরনের শীতের পিঠার সঙ্গে এই খেজুরের রস খেয়ে থাকে তাদের রক্তস্বল্পতার অভাব দেখা দেয় না। চলুন আমরা আরও এর উপকারিতা জেনে নেই,
- পেশীর অভাব দূর করে
- শরীরের ক্লান্তি দূর করে
- আর মজবুত করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- ওজন কমাতে সাহায্য করে
- ভিটামিনের অভাব দূর করে
- শরীরে থাকা আয়োডিন ও মিনারেলের অভাব দূর করে
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
- এছাড়াও খেজুরের রস হজম ক্ষমতা বাড়ায়
খেজুরের রস খেলে ওপরে এসব কারণগুলোর সমস্যা সমাধান করে। শরীরে থাকা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে খেজুরের রস তাই আমাদের প্রতিদিন এক গ্লাস করে খেজুরের রস খাওয়া উচিত শীতকালীন মৌসুমে।
খেজুরের রস দিয়ে গুড় সম্পর্কে জানুন
এতক্ষণ আমরা খেজুরের রস সম্পর্কে এটি কিভাবে সংগ্রহ করতে হয় বা এর উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম এখন আমরা এটি দিয়ে জনপ্রিয়গুড় তৈরি সম্পর্কে জানব। সাধারণত খেজুরের রস সংগ্রহ করার পর এটিকে আগুনের তাপে ঘন করে নেয়ার পর গুড় তৈরি হয়। এটি প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত। এটি সাধারণত গ্রাম অঞ্চলে তৈরি হয়ে থাকে খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি করে কৃষকেরা অনেক লাভবান হচ্ছেন। খেজুরের গুড় শীতকালীন মৌসুমী তৈরি করা হয়। সাধারণত খেজুরের রস খেজুর গাছ থেকে সংগ্রহ করার পর আগুনের তাপে ঘন করে নিতে হয় তারপরে এটিকে ঠান্ডা করে গুড় তৈরি করা হয়। এটি গ্রাম অঞ্চলের একটি প্রাচীনকালেরগুড় তৈরি পদ্ধতি।
খেজুরের রসের অপকারিতা
আমরা এতোখন খেজুরের তৈরি জনপ্রিয় খাদ্য নাম জানলাম এর উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি এখন আমরা অপকারিতা সম্পর্কে জানব। যারা কিডনি রোগে ভুগছেন তাদের খেজুরের রস না খাওয়াই ভালো খেজুরের রসে থাকা পটাশিয়াম কিডনির অনেক সমস্যা করে। ছাড়াও যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদেরকে নিষেধ করেছেন বিশেষজ্ঞরা কারণ এটিতে চিনি থাকার কারণে ডায়াবেটিসের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। কাঁচা খেজুরের রসের বেশি সমস্যা দেখা দেয় কাঁচা রস অনেক ঝুঁকি রয়েছে
খেজুরের রস খাওয়ার সতর্ক ও পরামর্শ
খেজুরের রসের বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ও ক্ষতিকর দিক রয়েছে তা এখন আমি এই আর্টিকেলটিতে এই বিষয় নিয়ে তুলে ধরব ১৯৯৯ সালে মালোশিয়া থেকে শুকুর খামার থেকে নিপা ভাইরাস সনাক্ত করেছিলেন। পরবর্তীতে এই ভাইরাস ২০০১ সালে বাংলাদেশের সনাক্ত করেন। পরে কিছু এলাকায় রসের নমুনা সংগ্রহ করে জানা যায় এটি বাদুড়ের লালা থেকে এই রোগ সৃষ্টি হচ্ছে.২০০১ থেকে২০০৮ এর মধ্যে ৩০০ জন আক্রান্ত হয়েছে আর ২১৫ জন এই রোগে মারা গিয়েছে।
খেজুরের গাছে রস সংগ্রহ করার সময় ঝুলিয়ে থাকা রসের হাড়ি বাদুড় রস খেতে এসে বাদুর এর মুখের লালা রসের সঙ্গে মিশিয়ে যায়। এভাবে রস খেয়ে অনেকে ই নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই খেজুরের রস কাঁচা থাকা অবস্থায় খেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে অনেকেই অসতর্কতা ভাবে খেজুরের রস সংগ্রহ করে এতে অনেক পাখি বা দূষিত পাখি বাদুর এই রস খেতে এসে রস গুলোকে জীবাণু করে ফেলে। তাই সরকার অনুমোদিত থেকে এই রস কাঁচা বা সঙ্গে সঙ্গে সংগ্রহ করে খাওয়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। এবং টাটকা রস হতে সতর্ক করেছেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url